ইমরুল শাহেদ
(ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে)
১. দোস্ত, ককসবাজার আইতাছি বন্ধু বান্ধব লইয়্যা। ফূর্তিফার্তি করুমনে। জয়েন দিছ। বোতল লাগবো। ভাল ব্র্যান্ডের। কই পামু? নাম্বার টাম্বার আছে?
— দোস্ত, ওয়েলকাম টু ককসবাজার৷ ইনশাল্লাহ তোদেরকে এক বেলা ডাল-ভাত খাওয়াতে পারলে খুশি হবো। তোদের যখন সময় হবে আমাকে বলিস, পউষি অথবা আলগণিতে তোদেরকে এক বেলা ভাত খাওয়াবো। আর দোস্ত, আমি যেহেতু মদ খাইনা, সেহেতু কোথায় কে মদ বিক্রি করে আমি জানিনা। সরি বন্ধু।
২. মাম্মা! কাইলকা তো তোগো ককসবাজার আইতাছি, মাল মুল আছে নি? একটা হাই ক্লাস কেঁচির ব্যবস্থা করে দে। বহুত দিন এনজয় করি না। ককসবাজার যাইয়া একটু রিলাক্স করি।
— দোস্ত, আমি কি কেঁচির দালাল? কেঁচির লগে কি আমার কন্টাক্ট? আমি কি কমিশনে কেঁচি সাপ্লাই দেই? তোর ব্যবস্থা তুই কর। সরি দোস্ত।
৩. ভাইচা, তোগো এলাকায় আইতাছি। গুঁটিমুটি কত কইরা লয়? পিনিক লাগব মাম্মা, পিনিক। লগে দুইটা লইচি। ত্রিসাম পিনিক চলব। চইল্যা আয়।
— দোস্ত, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, সিগারেট আমি যে খাইনা তুই ভাল করেই জানছ। আর এগুলো খাইতে হলে আমার তোরে দরকার নাই। সরি বন্ধু।
এই হল মাসের মধ্যে কয়েকবার আমার ফোনে ককসবাজারের বাইরের বন্ধুদের ফোন। সাথে আমার উত্তর।
* বেশিরভাগ টুরিস্ট পার্সোনাল গাড়ি যারা আনে তাদের সাথে মেয়ে থাকে একটা অথবা সর্বোচ্চ দুইটা। ছেলে থাকে ৩ জন বা ৪ জন। পেছনের বনেট ভর্তি থাকে মদের বোতল আর সীসা, গাঁজা। একজন পুরুষ আর একজন নারী রুম নেয়, বাকিরা পাশের রুমে থাকে। তারপর দুই রুম এক হয়ে যায়। হোটেলেওয়ালা মানা করলে হোটেলওয়ালাকে শাসায়, গরম দেখায়।
* আরেক পদ আছে হ্যাং আউট পার্টি। ৩/৪ বান্ধবী মিলে এসে লাক্সারী হোটেলে উঠে। ঘুরে ফিরে মজা করে। আর রাতে বা দিনে ফাঁকে ফাঁকে খ্যাপ মারে। যাওয়ার সময় একেকজনে ৩/৪ লাখ করে নিয়ে যায়।
* আরেক পদ আসে ইয়াবা কালেকশনের জন্য। বউ বাচ্চা মা সহ আসবে পার্সোনাল গাড়ি নিয়ে বা বাসে। যাওয়ার সময় বিশাল ইয়াবার চালান নিয়ে যাবে। এখন সাথে বুড়ো মা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও একটা চক্ষু লজ্জা আছে তো।
* এর বাইরে আছে সিজনাল পকেটমার পার্টি, আসেই পকেট মেরে ধান্ধা করতে। কিছু আসে বাটপারি বিজনেস প্ল্যান নিয়ে। কোন একটা হোটেলের নামে লিফলেট, কুপন ছাপিয়ে সারা দেশে বিক্রি করে। কুপন নিয়ে হোটেলে দেখা গেল ওই কুপন কলা পাতা।
আরো নানা ধরনের জোচ্চুর, বাটপার, কালপ্রিট, ধাপ্পাবাজ, ঝাটকাবাজ, ফটকাবাজ, নটাঙ্কি, খ্যাপ পার্টি, শোয়া পার্টি, মলম পার্টির বাইরে যারা শুদ্ধ অবসর, বিনোদন ও পারিবারিক শান্তির আশায় খোদার অপূর্ব প্রাকৃতিক ভূমিতে আসেন মনোপুতের জন্য, তারাও এই সমস্ত পঞ্চতন্ত্রের শাঁকের করাতে পড়ে দিশেহারা হয়ে যান।
আর যারা যারা ককসবাজার বয়কট করবেন, একটু মনে রাইখেন। বয়কট ফ্রান্সের মত যেন আবার হজম করে না ফেলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।